রোগগুলো রাবার প্লান্টেশন বিশেষজ্ঞের পরামশৃক্রমে সনাক্ত করে প্রয়োজণীয় প্রতিকারের ব্যবস্থা করে নিতে হবে।
বাগানের শূণ্যস্থান পূরণ ও পরিচর্যা :
উদ্দেশ্য হতে হবে প্রতি একরে সমপরিমান গাছ রাখা। এ উদ্দেশ্য স্ভার্থক করা জন্য নার্সারীতে স্বাস্থ্যবান চারা ডিনর্বাচন করতে হবে এবঙ চারা রোপনসহ অন্যান্য কাজগুলোো নিয়ম মোতাবেক অবশ্যই সম্পন্ন করতে হবে। যদি কোন চারা মরে যাোয়ার সম্ববাবনা পরিলক্শিত হয়/মরে যায় তা অবিলম্বে সরিয়ে তদস্থলে পুন;চারা রোপন করতে হবে। শুষ্ক মেৌসুমে কোন চারা মরে গেলে পরবর্তী বর্ষা মেৌসুমে বিগত বছরেরর সমসাময়িক বয়সের নার্সারীর শূণ্যস্থান পূরণ করতে হবে।
বাগান পরিচর্যা;
ভাল নার্সারী সৃস্টি এবং বাগান সৃষ্টি করে যদি সঠিকভাবে পরিচর্যা করা না হয়, তবে থেকে কোন ভাল উৎপাদন আশা করা যায় না। নিয়ম মোতাবেক সময়মত জঙগল কাটা, চারার লাইন পরিষ্কার, সার প্রয়োগ, আগাছা দমনের জন্য ক্যাসমক্যাল স্প্রে ইত্যাদি সম্পন্ন করতে হব্ নিয়ম অতিরিক্ত ডালপালা প্রুনিং এবং প্রয়োজনবোধে ব্রান্জ ইনডাকশন করতে হবে। গাছের ডাল পালায়, শিকড়ে ো বাকলে রোগ দেখা দিতে পার্ কোন গাছ আক্রান্ত হলে অবিলম্বে তা নিয়ম মোতাবেক প্রতিকারের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
রাবার উৎপাদন (টেপিং);
পরিপক্ক রাবার গাছ হতে নিয়ন্ত্রিত কাটার মাধ্যমে কষ সঙগ্রহ করার পদ্ধতিকে টেপিঙ বলে। রাবার বাগান হতে এ কস আহরণই বাগান সৃষ্টির মূর উদ্দেশ্য। সঠিক টেপিঙয়ের মাধ্যমে কষ/লেটেক্স উৎপাদনক্টসম রাবার গাছ হতে সর্বাধিক পরিমান কষ আহরণ করা সম্ভব। কিন্তু ভুল পদ্ধতিতে টেপিঙয়ের ফলে গাছের মারাত্নক ক্ষতি হতে পারে। এ সমস্ত কারণে সঠিক পদ্ধতিতে টেপিং করে কষ আহরণ করা রাবার উৎপাদনের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাই টেপিং সংশ্লিষ্ট কাজে জড়িত সকল স্তরের কর্মকর্তা, কর্মচারী ো শ্রমিকদের সতর্ক থেকে সঠিক পদ্ধতিতে কষ আহরণে সচেষ্ট হতে হবে। বাকলই হচ্ছে রাবার গাছের একমাত্র উৎপাদনশীল অঙশ। বাকলের ভিতরের অংশে রয়েছে লেটেক্স ভেসেল বা রাবার উৎপাদনকারী কষনালী। এই কষনালীগুলোতেই দুধের মত সাদা রাবার কষ সঞ্চিত থাকে। টেপিং করার সময় বাকলের বাইরের দুটি স্তর ভেদ করে এই কষনালীর স্তর কেটেই রাবার কস সংগ্রহ করতে হবে।
রাবার গাছ টেপিংয়ের নিয়ম ও পদ্ধতি ;
আমাদের দেশে রাবার চারা রোপনের পর ৬ বছর পরিচর্যা শেষে রাবার গাছ টেপিং উপযোগী হয়ে থাকে। রাবার গাছ টেপিং এর ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত নিয়ম ো পদ্ধতি অনুসরণ করা একান্ত অপরিহার্য।
(২) টেপিং কাটা বাম পাশের উপরের দিক হতে ক্রমশ: ঢালু হয়ে ডান পাশের নিচের দিকে হোয়া উচিত।
(৩) যতুদুর সম্ভব টেপিং কাজটি ফ্লাট রাখা উচিত ।
(৪) প্রতিমাসে ১৫ মি:মি: এর অধিক পুরো বাকল কোনমতেই কাটা উচিত নয়। বেশি বাকল কাটলেই কষ উৎপাদন বাড়বে না।
(৫) কাজের টেপিং কালে খেয়াল রাখাতে হবে যাতে গাছের ক্যাম্বিয়াম আঘাত প্রাপ্ত না হয়। কারণ ক্যাম্বিয়ামে আঘাত লাগলে বাকল গজাবার ক্ষেত্রে বিঘ্ন ঘটে। স্পাউট গভীরে বসাতে গিয়েও ক্যাম্বিয়ামে আঘাত করা উচিত নয়।
(৬) অর্থ পরিধির কাটার উপর কলম করা গাছে একদিন পর একদিন টেপিং করা বাঞ্চনীয়। অত্যাধিক টেপিং এ ব্রাবনি বাস্ট রেনাগের সৃষ্টি হয়।
(৭) যত ভোরে সম্ভব টেপিংয এর কাজ শুরু করা উচিত।
(৮)টেপিং নাইফ সব সময়ঙ খুব ধারাল হওয়া বাঞ্চনীয়।
(৯) টেপিং করার পূবেৃ টেপিং কাটার স্থান ও বাটি পরিষ্কার করা উচিত। এতে কষ ধূষিত হবে না।
(১০) টেপিং এর সময় সব কিছুতেই পরিষ্কার পরিচ।ছন্নতা রক্ষা করা উচিত।
(১১) কারখানায় নিয়ে জমাট বাধার প্রক্রিয়া শুরু না করা পর্যন্ত কষে তরল অবস্থা বজায় রাখা উচিত। প্রয়োজনে এন্টি কোয়াগুলেন্ট (এ্যামোনিয়া) ব্যবহার করা উচিত।
বাগান হতে তরল রাবার কষ এবং ট্রিলেজ/কাপলাম্প সংগ্রহ করা হয়। সাধারনত েটপিং এর ৪ ঘন্টা পর বাটিতে জমা হোয়া কষ সংগ্রহ করে সংগ্রহকেন্দ্রে এবং পরে কারখানায় নিয়ে প্রক্রিয়াজাতকরণের ব্যবস্থা করা হয়। কাপলাম্প সাধারনত তরল কষ সংগ্রহের পর যে সমস্ত গাছ হতে দেরীতে কষ পড়তে থাকে সে সমস্ত লেটড্রপার গাছ হতে সংগ্রহ করা হয় এবং এ কষ বাটিতে আপনা আপনি জমাট বেধে যায় এবং পরবর্তীঙতে টেপিংয়ের পূর্বেই সংগ্রহ করে নেয়া হয়।
টেপিংয়ের সময়;
রাবার কষ বেশী পেতে হলে যত ভোরে সম্ভব টেপিং কাজ শুরু করা উচিত। সাধারনত: খুব ভোরে যখন প্যানেল লাইন দেখা সম্ভব তখনই টেপিং আরম্ভ করতে হবে। এ সময় সূর্যের আলো না পাওয়ায় গাছ প্রস্বেদন ক্রিয়া শুরূ না হওয়ায় কষনালীতে লেটেক্স প্রবাহ চালু থাকে। সূর্যের তাপ বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে কষনালীসমূহ সংকুচিত হয়ে আসার ফলে লেটেক্স প্রবাহ নকমে আসে।
উচ্চ ফলনশীল বাড ব্যাংক সৃজনঃ
উচ্চ ফলনশীল জাত সৃষ্টির জন্য বাড ব্যাংক সৃষ্টি অপরিহার্য । বাড ব্যাংকের জন্য স্থান নির্ধারেন ও ভুমি প্রস্তুত গ্রাউন্ড নার্সারীর ন্যায় করতে হবে। বাড ব্যাংকে ৪’-৪’ দূরত্বে চারা রোপন করতে হবে। এ পদ্ধতিতে প্রতি একরে ২৭০০ টি চারা রোপন করা সম্ভব। প্রতি পয়েন্টে এক সাথে ২-৩টি চারা রোপন করা যেতে পারে। পরবর্তীতে ২(দু্ই) মাস পরে সবল চারাটি রেখে দুর্বল চারা উঠিয়ে ফেলতে হবে । চারাসমূহ নিয়মিত পরিচর্যা করতে হবে । এপ্রিল সম মাসে উচ্চফলনশীল জাকের বাড দ্বারা গ্রাফটিং করতে হবে । সাধারনতঃ গ্রাফটিংয়ের দুই বছর পর গ্রাফাইটের স্টাাম্পসমূহ সবুজ বাড তৈরির উপযুক্ত হয়। বাড ব্যাংকের চারা নিয়মিত পরিচর্যা ও প্রুনিং করে দীঘদিন যাবৎ টিকিয়ে রাখা যায়। সাধারনতঃ সেপ্টেম্বর- অক্টোবর মাসে বাড ব্যাংকের গাছ প্রুনিংয়ের উপযুক্ত সময়।
আবরণী লতার জাত ওগুনাগুনঃ
বিভিন্ন জাতের আবরনী লতা রয়েছে যেমন – পিউরেরিয়া ফেসিউলয়েডস,ক্যালাপগোনিয়াম,মুকুনয়েডস, সেনট্রোসিমা পুবাসসিন,ক্যালাপগোনিয়াম সেরেলিয়াম,কডেসমোডিয়াম ওভালিফিলিয়াম ইত্যাদি । উল্লেখিত প্রজাতিগুলোর মধ্যে পিউরেরিয়া ফেসিউলয়েডস, ক্যালাপগোনিয়াম, মুকুনয়েডস,সেনট্রোসিমা পুবাসসিন গ্রাউন্ড কভার ও নাইট্রোজেন ফিক্সেশন হিসেবে বাগানে ব্যবহারের জন্য সবচেয়ে উপযোগী। এগুলো যথাক্রমে ৩ পাঃ, ১পাঃ, ২ পাঃ হিসেবে প্রতি একরে বপন করতে হবে। আবরণীলতা মাটির ক্ষয়রোধ, পানি সংরক্ষণ, আগাছা দমন, নাইট্রোজেন সৃষ্টি ও গাছের বৃদ্ধি ইত্যাদিতে বিশেষ সহায়ক ভূমিকা রাখে।
বাগান সৃজনঃ
ধাপ কাটা, গর্ত করা ওচারা রোপনঃ
প্রস্তাবিত বাগন এলাকায় জংগল পরিস্কার করা এবং পাহাড়ী ভূমিকে সময়মত ধাপ না হলে বাগানে চারা লাগানো যে উদ্দেশ্যে তা বিলম্বিত হয়।
ধাপ কাটা হলে নিম্নে বর্ণিত সূবিধাসমূহ অর্জন করা যায়ঃ
(১) মটি কম ধবসিয়া যায়।
(২) মাটিতে আদ্রতা রক্ষা করে।
(৩) রাবার গাছের কাছে যাতায়াত সহজ হয়।
৪’ ফুট শক্ত মাটি কেটে পাহাড়ের দিকে ৯’’ ঢালু নিম্নগামী ধাপ কাটা প্রয়োজন। এত মাটি ধসে যাওয়া প্রতিরোধ এবং পানি সংরক্ষন হবে। কর্তনর্কৃত মাটি ধাপের বাইরের সীমানায় ভালভাবে বসিয়ে দিতে যার ফলে ধাপের প্রস্ত প্রায় ৫‘-৬‘ এ দাড়াবে। ধাপে ৫০‘-৬০‘ অন্তর ২‘ প্রস্ত স্টপ ব্যান্ড দিতে হবে যা মাটি ধুইয়ে যাওয়া প্রতিরোধ রেবে। ধাপ কাটা পাহাড়ের উপরের দিকে থেকে আরম্ভ করে নীচের দিকে যেতে হয়।
গর্ত খনন ওভরাট করাঃ
নিয়মানুযায়ী গর্ত খননের কাজ সম্পন্ন করতে হবে। এখানে অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে, ছোট ছোট চারা নরম মাটিতে যেন সহজে শিকড় বসাতে পারে এ কারনেই গর্ত করা হয়। খননকৃত গর্তে ২ সপ্তাহ খোলা রাখতে হবে। উপরের মাটি দ্বারা গর্ত ভর্তি রেকত হবে এবং কোনক্রমেই যেন গর্ত ভর্তির পর ফাকা না থাকে সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। গর্তের সাইজ হবে ২’x২’x২’ ।
চারা রোপনঃ-
চারা রোপনের পূর্ববতী সমস্ত কাজগুলো সময় মত সম্পাদন করতে হবে যাতে বৃষ্টি শুরু হওয়ার সংেগে সংগে চারা রোপন করা যায়। চারা লাগানোর সময় এ কাজে অভিজ্ঞ ম্রমিক নিয়োগ করতে হবে এবং প্রতিটি কাজের অগ্রগতি দেখার জন্য কড়া তদারকি প্রয়োজন। ১১ মাস পদ্ধতির চেয়ে ২১ মাস পদ্ধতির নার্সরীর কার্যকারীতা বেশী । স্বাস্থ্যবান এবং যে সমস্ত চারার পত্র গুচ্ছ শক্ত হয়েছে কেবল মাত্র সগুই নার্সারী থেকে রোপনের জন্য নির্বাচন করতে হয়। কারন স্বাস্থবান চারা থেকে ভাল চারা সৃষ্টি এর্ং বেশী উৎপাদন আশা করা যায। চারাগুলো হস্তান্তরের সময় সতর্কতাসহ যত্ন নিতে হবে। অসর্তকত্র সাথে চারাগুলো হাত দিয়ে নাড়া চাড়া স্থানান্তর করলে চারায় অগাত লাগতে পারে এবং একারণে চারা গুলো মারা যেতে পারে। চারা রািপনের সময় পলিব্যাগের নিচের তলা ধারালো চাকু অথবা ব্লেট দিয়ে প্রথমে গোল করে কেটে গর্তের পরিমিত হভীরতায় বসানোর পর অবশিষ্ট পলিথিন নিচের দিক থেকে খাড়াকাড়ি ভাবে কেটে গর্তে টি এস.পি সার ওউপরি ভাগের মাটি ব্যবহার করতে হবে। চারা লাগানোর ২মাস পরে এবং বর্ষাকালে শেষ হওয়ার পূর্বে নিয়ম মোতাবেক মালচিং ব্যবহার করতে হবে।
রবার গাছে রোগ বালাই এবং প্রতিকারঃ
রাবার গাছের মূলে সাধারণতঃ নিম্ন বর্ণিত তিন ধরনের রোগ দেখা যায়ঃ
(ক)Rigidoporus lignosus(White root disesse)
(খ) Ganoderma pseudoferreum(Red root disease)
(গ)Phellinus noxus (Brown root disease)